আউলিয়া কেরামের মাজার কেন আমরা জিয়ারত করব
আল্লাহর অলিদের সম্পর্কে কোরানে যা আছে
সোরা ইউনুস ৬২
الا ان اولیآء الله لا خوف علیهم و لا هم یحزنون ﴿۶۲﴾
শুনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই, আর তারা পেরেশানও হবে না। আল-বায়ান
জেনে রেখ! আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই আর তারা দুঃখিতও হবে না। তাইসিরুল
সোরা কাহাফ ১৭
ضۡلِلۡ فَلَنۡ تَجِدَ لَهٗ وَلِیًّا مُّرۡشِدًا ﴿۱۷﴾
و تری الشمس اذا طلعت تزور عن كهفهم ذات الیمین و اذا غربت تقرضهم ذات الشمال و هم فی فجوۃ منه ذلك من ایت الله من یهد الله فهو المهتد و من یضلل فلن تجد لهٗ ولیا مرشدا ﴿۱۷﴾
আর তুমি দেখতে পেতে, সূর্য উদিত হলে তাদের গুহার ডানে তা হেলে পড়ছে, আর অস্ত গেলে তাদেরকে বামে রেখে কেটে যাচ্ছে, তখন তারা ছিল তার আঙিনায়। এগুলো আল্লাহর আয়াতসমূহের কিছু। আল্লাহ যাকে হিদায়াত দেন, সে হেদায়াতপ্রাপ্ত। আর যাকে ভ্রষ্ট করেন, তুমি তার জন্য পথনির্দেশকারী কোন অভিভাবক পাবে না। আল-বায়ান
তুমি দেখতে পেতে সূর্য উদয়ের সময় তাদের গুহা হতে ডান দিকে হেলে যেত, আর যখন তা অস্তমিত হত তখন তা তাদের থেকে বাম দিকে নেমে যেত, আর তারা ছিল গুহার অভ্যন্তরে বিশাল চত্বরে। এ হচ্ছে আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। আল্লাহ যাকে সৎপথ দেখান সে সঠিকপথপ্রাপ্ত আর যাকে তিনি পথহারা করেন, তার জন্য তুমি কক্ষনো সৎপথের দিশা দানকারী অভিভাবক পাবে না। তাইসিরুল
তুমি সূর্যকে দেখবে যখন উদিত হয়, তাদের গুহা থেকে পাশ কেটে ডান দিকে চলে যায় এবং যখন অস্ত যায়, তাদের থেকে পাশ কেটে বাম দিকে চলে যায়, অথচ তারা গুহার প্রশস্ত চত্বরে শায়িত। এসবই আল্লাহর নিদর্শন। আল্লাহ যাকে সৎ পথে পরিচালিত করেন সে সৎ পথ প্রাপ্ত এবং তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি কখনও তার কোন পথ প্রদর্শনকারী অভিভাবক পাবেনা। মুজিবুর রহমান
সোরা আল ইমরান ১৬৯
و لا تحسبن الذین قتلوا فی سبیل الله امواتا بل احیآء عند ربهم یرزقون ﴿۱۶۹﴾
আর যারা আল্লাহর পথে জীবন দিয়েছে, তাদেরকে তুমি মৃত মনে করো না, বরং তারা তাদের রবের নিকট জীবিত। তাদেরকে রিয্ক দেয়া হয়। আল-বায়ান
যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে, তাদেরকে মৃত ভেব না, বরং তারা জীবিত, তাদের প্রতিপালকের সান্নিধ্যে থেকে তারা রিযকপ্রাপ্ত হচ্ছে। তাইসিরুল
যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে কখনও মৃত মনে করনা; বরং তারা জীবিত, তারা তাদের রাব্ব হতে জীবিকা প্রাপ্ত। মুজিবুর রহমান
আমাদের দেশের শায়েখ নামের কিছু দাজ্জাল ফতোয়া দেয় জিয়ারতের উদ্দেশ্য কোথায় যাওয়া জায়েয নেই।আল্লাহ আমাদের এসব দাজ্জাল থেকে হেফাজত করুক।
দলিল নং-০৮
اصاب الناس قحط في زمان عمر_ فجاء رجل الي قبر النبي صلعم فقال يارسول الله استسف لامتك فانهم قد هلكوا فاتي الرجل في المنام فقيل له ائت عمر فاقرئه السلام _ واخبره انكم مستقيمون
হযরত ওমর রঃ এর সময় একদা অনাবৃষ্টির কারণে মানুষের উপর দুর্ভিক্ষ পতিত হল । তখন এক সাহাবী হযরত বেলাল বিন হারেস রঃ রাসূল দঃ এর রওযা মোবারকে এসে আবেদন করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ দঃ আপনার উম্মত ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে আপনি আল্লাহর দরবারে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করুন । সে সাহাবিকে স্বপ্নযোগে বলা হল , হযরত ওমর রঃ কে গিয়ে সালাম বল এবং তাকে বল যে তোমাদেরকে বৃষ্টি দান করা হবে । সুবহানাল্লাহ !
_______________________________
✔ আল মুসান্নাফ ,ইবনে আবি শায়বাহ ।
✔ {খন্ড ১২ ,পৃঃ৩২ হাদিস নং ১২০৫১.}
✔হযরত ইবনে হাজর আসকালানী রহঃ, ফতহুল বারী শরহে বুখারী ,
✔{খন্ড ২ পৃঃ ৪৯৫ ও ৪১২}
এ হাদিছ থেকে আরো পরিষ্কার গেল আল্লাহর ওলী ছাহাবাদের উছিলা নিয়ে কিছু চাইলে তা অবশ্যই কবুল করে থাকেন।আর কারনেই নবীজি হযরত ওমর (রাঃ) এর দরবারে গিয়ে আবেদন করার পরামর্শ দিলেন।
এভাবে সাহাবায়ে কেরাম তাবেয়ীন ও আইম্মায়ে মুজতাহিদগনের জীবনী থেকে দলিল দিতে গেলে বিশাল একটি গ্রন্থে পরিণত হবে তাই পোষ্টের কলেবর বৃদ্ধি না করে সংক্ষেপে কয়েকটি সহীহ হাদিছ তুলে ধরলাম।
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ এখনও সময় আছে নিজের ছেলে সন্তান ভাই বোনদের আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের সঠিক আক্বিদায় দীক্ষিত করার পরামর্শ রইল অন্যথায় আপনার মৃত্যুর পর কবর জিয়ারত করার মতো কোন লোক পাওয়া যাবেনা।আপনার রেখে যাওয়া স্নেহের সেই সন্তান উল্টো ফতোয়া মারবে কবর জিয়ারত শিরক বিদআত (নাউজুবিল্লাহ)।
আমাদের সবাইকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বিদার উপর অটল থাকার তৌফিক দান করুক।
(আমিন)
আউলিয়া আল্লাহর মাজার শরীফ জিয়ারতের দলিল:-
=====================প্রমাণ নং ১ : হযরত বুরায়দা (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম রঊফুর রহীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ ফরমান,-----“ইতিপূবে আমি তোমাদেরকে কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, এখন থেকে জিয়ারত করো (মুসলিম
শরীফ, মেশকাত ১৫৪
পৃষ্ঠা)। ব্যাখ্যা : এ হাদীস শরীফের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শায়খ আব্দুল হক মোহাদ্দীসে দেহলভী
(রাহ:) লিখেছেন যে,
অজ্ঞতার যুগ সবেমাত্র পার হওয়ায়
রাসূলে করীম রঊফুর রহীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর জিয়ারত নিষেধ করেছিলেন এই আশংকায় যে মুসলমানরা পুরনো জীবনধারায় প্রত্যাবর্তন করবেন। তবে মানুষেরা যখন ইসলামী ব্যবস্থার সাথে ভালভাবে পরিচিত হলেন, তখন প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিয়ারতকে অনুমতি দিলেন
(আশ্আতুল লোমআত, ১ম খন্ড, ৭১৭ পৃষ্ঠা)
প্রমাণ নং ২ : হযরত ইবনে মাসউদ (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম রঊফুর রহীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “আমি তোমাদের কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, এখন থেকে জিয়ারত করো। ” (ইবনে মাজাহ, মেশকাত পৃষ্ঠা ১৫৪)।
প্রমাণ নং ৩ : মোহাম্মদ বিন নোমান (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলে করীম রঊফুর রহীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ ফরমান, “যে ব্যক্তি প্রতি শুক্রবার তার পিতা- মাতার বা তাঁদের যে কোনো একজনের কবর জিয়ারত করে তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে এবং পুণ্যবান একজন হিসেবে তার নাম লেখা হবে।” (মেশাকাত, ১৫৪ পৃষ্ঠা)
প্রমাণ নং ৪ : ইমাম শাফেয়ী (রহ:)-এর আকিদা : আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী (রহ:) ইমাম শাফেয়ী (রহ:)-এর কথা উদ্ধৃত করেন, যিনি বলেন, “আমি ইমাম আবু হানিফা (রহ:)-এর সাহায্য প্রার্থনা করি এবং তাঁর মাযার জিয়ারত করি। আমার যখন কোনো কিছুর প্রয়োজন হয় তখন আমি দু’রাকাত নামায আদায় করে ইমাম আবু হানিফা (র:)-এর মাযার জিয়ারত করি এবং তৎক্ষণাৎ আমার প্রয়োজন পূরণ হয়ে যায়” (রাদ্দুল মোহতার, ১ম খন্ড, ৩৮ পৃষ্ঠা)।
শায়খ আব্দুল হক দেহলভীও লিখেন: “ইমাম শাফেয়ী (রহ:) বলেছেন যে হযরত মূসা কাযেমের (রহ:) মাযারে তাৎক্ষণিক দোয়া কবুল হয়” (আশ্আতুল লোমআত, ১ম খন্ড, ৭১৫ পৃষ্ঠা)।
প্রমাণনং ৫ : ইমাম সাবী মালেকী (রাহ:)- এর আকিদা- বিশ্বাস “আল্লাহর নৈকট্যের জন্যে ওসীলা অন্বেষণ করো”- আল কুরআন
(৫:৩৫)-এর এই আয়াতটি
ব্যাখ্যাকালে ইমাম সাবী (রহ:) বলেন. “আল্লাহ্ ভিন্ন অপর কারো এবাদত- বন্দেগী করছেন মনে করে আউলিয়ায়ে কেরামের মাযার জিয়ারতকারী মুসলমানদেরকে কাফের আখ্যা দেয়া স্পষ্ট গোমরাহী। তাঁদের মাযার জিয়ারত করা আল্লাহ্ ভিন্ন অন্য কারো এবাদত-বন্দেগী নয়, এটা হলো আল্লাহ্ যাঁদেরকে ভালবাসেন তাঁদেরকে ভালবাসার নিদর্শন” (তাফসীরে সাবী, ১ম খন্ড, ২৪৫ পৃষ্ঠা)
প্রমাণ নং ৬ : সুলতানুল মাশায়েখ হযরত নিযামউদ্দীন আউলিয়ার আকিদা-বিশ্বাসঃ হযরত নিজামউদ্দীন আউলিয়া (রহ:) বলেন যে মওলানা কাটহেলী একবার তাঁর নিজের ঘটনা বর্ণনা করেন: কোনো এক বছর দিল্লীতে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। আমি একটি বাজার এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলাম আর তখন আমার ক্ষুধা পেয়েছিল । আমি কিছু খাবার কিনে মনে মনে বল্লাম, এ খাবার আমার একা খাওয়া উচিৎ নয়; এটা কারো সাথে ভাগাভাগি করতে হবে। এমতাবস্থায় আমি এক বৃদ্ধ মানুষের দেখা পেলাম যাঁর গায়ে চাদর মোড়ানো ছিল। আমি তাঁকে বল্লাম,
ওহে খাজা! আমি গরিব এবং আপনাকেও গরিব মনে হচ্ছে। মওলানা কাটহেলী ওই বৃদ্ধকে খাবার গ্রহণের জন্যে আমন্ত্রণ জানালেন এবং তিনি তা গ্রহণ করলেন।
মওলানা কাটহেলী বলেন, আমরা যখন খাচ্ছিলাম তখন আমি ওই বয়স্ক মরুব্বীকে জানালাম যে আমি ২০ টাকা (রূপী) ঋণগ্রস্ত। এ কথা শুনে ওই বয়স্ক মরুব্বী আমাকে খাওয়া চালিয়ে যেতে তাগিদ দিলেন এবং ওই ২০ টাকা (রূপী) এনে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন। আমি আপন মনে ভাবলাম, তিনি এই টাকা পাবেন কোথায়? খাওয়া শেষে সেই বয়স্ক মরুব্বী উঠে দাঁড়িয়ে আমাকে মসজিদে নিয়ে গেলেন। এই মসজিদের ভেতরে একটি মাযার অবস্থিত ছিল। তিনি ওই মাযারের কাছে কী যেন চাইলেন। তাঁর হাতে যে ছোট লাঠি ছিল তা দ্বারা দু’বার মাযারে আলতোভাবে ছুঁয়ে তিনি বললেন, এই লোকের ২০ টাকা প্রয়োজন, তাকে তা দেবেন। অতঃপর দেবেন। অতঃপর বয়স্ক মরুব্বী বয়স্ক মরুব্বী আমার দিকে ফিরে বললেন,
‘মওলানা, ফিরে যান; আপনি আপনার ২০ টাকা পেয়ে যাবেন।’ আমি একথা শুনে ওই মরুব্বীর হাতে চুমো খেলাম এবং শহরের দিকে ফিরে চললাম। আমি ভেবে পাচ্ছিলাম না কীভাবে আমি ওই ২০ টাকা খুঁজে পাবো। আমার সাথে একটা চিঠি ছিল যা কারো বাসায় আমাকে পৌঁছে দেবার কথা ছিল। ওই চিঠি যথাস্থানে নিয়ে গেলে আমি জনৈক তুর্কী ব্যক্তির দেখা পাই। তিনি তাঁর গৃহ- ভৃত্যদের বল্লেন আমাকে উপর তলায় নিয়ে যাবার জন্যে। আমি তাঁকে চেনার চেষ্টা করেও মনে করতে পারলাম না, কিন্তু তিনি বার বার বলছিলেন কোনো এক সময় নাকি আমি তাঁকে সাহায্য করেছিলাম। আমি তাঁকে না চেনার কথা বললেও তিনি আমাকে চিনতে পেরেছেন বলে জানালেন। আমরা এভাবে কিছুক্ষণ কথাবর্তা
বললাম। অতঃপর তিনি ভেতর থেকে ফিরে এসে আমার হাতে ২০ টাকা গুজে দিলেন (ফাওয়াইদ আল ফাওয়াদ, ১২৪ পৃষ্ঠা)
প্রমাণ নং ৭ : আল্লামা জামী (রহ:)-এর আকিদা-বিশ্বাস আল্লামা জামী (রহ:) শায়খ আবুল হারিস আওলাসী (রহ:)-কে উদ্ধৃত করেন, যিনি বলেন যে হযরত যুন্নূন মিসরী (রহ:) সম্পর্কে তিনি অনেক কিছু শুনেছেন। তাই কিছু মাসআলা সম্পর্কে জানতে আল্লামা জামী (রহ:) তাঁর সাথে দেখা করার কথা মনস্থ করেন। কিন্তু যখন তিনি মিসর পৌঁছেন তখন জানতে পারলেন যে হযরত যুন্নূন মিসরী (রহ:) বেসালপ্রাপ্ত (খোদার সাথে পর পারে মিলিত) হয়েছেন। এমতাবস্থায় আল্লামা জামী (রহ:) তাঁর মাযারে যান এবং মোরাকাবায় বসেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি হয়রান বোধ করেন এবং ঘুমিয়ে পড়েন। অতঃপর তিনি হযরত যুন্নূন মিসরী (রহ:)-কে স্বপ্নে দেখেন এবং তাঁর প্রশ্নগুলো উত্থাপন করেন। শায়খ মিসরী তাঁর সব প্রশ্নের উত্তর দেন এবং তাঁর কাঁধ থেকে বোঝা নামিয়ে দেন (নাফহাত আল্ উনস্ ১৯৩ পৃষ্ঠা)
প্রমাণ নং ৮ :
ইমাম ইবনে হাজর মক্কী শাফেয়ী (রহ:)- এর আকিদা ইমাম ইবনে হাজর মক্কী (রহ:) লিখেন, উলামা ও যাদের প্রয়োজন তাঁদের মধ্যে এই আচার সবসময়ই চালু ছিল যে তাঁরা ইমাম আবু হানিফা (রহ:)-এর মাযারে যেতেন এবং নিজেদের অসুবিধা দূর করার জন্যে তাঁর মাধ্যমে দোয়া করতেন। এ সকল ব্যক্তি এটাকে সাফল্য লাভের একটা ওসীলা মনে করতেন এবং এর অনুশীলন দ্বারা বড় ধরনের পুরস্কার লাভ করতেন। বাগদাদে থাকাকালীন সব সময়েই ইমাম শাফেয়ী (রহ:) ইমাম আবু হানিফা (রহ:)- এর মাযারে যেতেন এবং তাঁর কাছে আশীর্বাদ তালাশ করতেন। তালাশ করতেন। যখন আমার (ইমাম ইবনে হাজর) কোনো প্রয়োজন দেখা দেয়, তখন আমি দু’রাকাত নামায আদায় করে তাঁর মাযারে যাই এবং তাঁর ওসীলায় দোয়া করি। ফলে আমার অসুবিধা তৎক্ষনাৎ দূর হয়ে যায় (খায়রাত আল্ হিসান, ১৬৬ পৃষ্ঠা)।
প্রমাণ নং ৯ : শায়খ আব্দুল হক দেহেলভী (রহ:)- এর আকিদা শায়খ আব্দুল হক দেহেলভী (রহ:) লিখেন: “কবর যেয়ারত করা মোস্তাহাব (প্রশংসনীয়) এ ব্যপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে” (আশআতুল লোমআত, ১ম খন্ড, ৭১৫ পৃষ্ঠা)।
তিনি আরও লিখেন: “জিয়ারতের সময় কবরস্থদেরকে সম্মান প্রদর্শন করা ওয়াজিব (অবশ্য কর্তব্য), বিশেষ করে পুণ্যবান বান্দাদের ক্ষেত্রে। তাঁরা যাহেরী জিন্দেগীতে থাকাকালীন তাঁদেরকে সম্মান প্রদর্সম্মান প্রদর্শন করা যেমন প্রয়োজনীয় ছিল, একইভাবে তাঁদের মাযারেও তা প্রদর্শন করা জরুরি। কেননা, মাযারস্থ বুযুর্গ, মাযারস্থ বুযুর্গানে দ্বীন যে সাহায্য করে থাকেন, তা তাঁদের প্রতি জিয়ারতকারীদের প্রদর্শিত ভক্তি- শ্রদ্ধার ও সম্মানের ওপরই নির্ভর করে ” (আশআতুল লোমআত, ১ম খন্ড ৭১০ পৃষ্ঠা)।
প্রমাণ নং ১০ :শাহ্ ওয়ালিউল্লাহ্ মুহাদ্দিস দেহেলভীর আকিদা- বিশ্বাসঃ শাহ্ও য়ালিউল্লাহ্ লিখেন যে তাঁর পিতা শাহ্ আব্দুর রহীম বলেছেন, “একবার আমি হযরত খাজা কুতুবউদ্দীন বখতেয়ার বাকী (রহ:)-এর মাযার শরীফ জিয়ারত করতে যাই। এমতাবস্থায় তাঁর রূহ্ মোবারক আমার সামনে দৃশ্যমান হন এবং আমাকে বলেন যে আমার একজন পুত্র সন্তান জন্ম লাভ করবে, আর আমি যেন ওর নাম রাখি কুতুবউদ্দীন আহমদ। ওই সময় আমার স্ত্রী বয়স্ক হয়ে গিয়েছিল এবং সন্তান ধারণের বয়স পেরিয়েছিল। তাই শায়খের এ কথা শুনে আমি মনে মনে ভাবলাম সম্ভবত আমার নাতি হতে যাচ্ছে। হযরত বখতেয়ার কাকী (রহ:) আমার মনের কথা বুঝতে পেরে সন্দেহ দূর করে দিলেন এ কথা বলে যে তিনি নাতির খোশ- খবরী (শুভ সংবাদ) দেননি, বরং আমার নিজের একজন পুত্র সন্তানের কথা বলেছেন। কিছু কাল পরে আমি আবার বিয়ে করি এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে (শাহ্) ওয়ালিউল্লাহর জন্ম হয়।” শাহ্ ওয়ালিউল্লাহ্ বলেন, ’আমার জন্মের সময় আমার বাবা ওই ঘটনার কথা ভুলে গিয়েছিলেন আর তাই আমার নাম রেখেছিলেন ওয়ালিউল্লাহ্। তাঁর যখন এ ঘটনার কথা মনে পড়ে যায়, তখন তিনি আমার দ্বিতীয় নাম রাখেন কুতুবউদ্দীন আহমদ। (আনফাস্ আল্ আরেফীন,১১০ পৃষ্ঠা)।
প্রমাণ নং ১১ : শাহ্ আব্দুল আযীয দেহলভীর আকিদা-বিশ্বাস শাহ্ আব্দুল আযীয লিখেন: “শরহে মাকাসিদ গ্রন্থে লেখা আছে যে মাযার জিয়ারত করা উপকারী এবং মাযারস্থ আউলিয়ায়ে কেরামের রূহ্ মোবারক উপকার সাধন করতে সক্ষম। বাস্তবিকই বেসাল (খোদার সাথে পরলোকে মিলিত)-প্রাপ্ত হবার পরে আউলিয়ায়ে কেরামের রূহ্ মোবারক তাঁদের শরীর ও মাযারের সাথে সম্পর্ক রাখেন। তাই কেউ যখন কোনো ওলীর মাযার জিয়ারত করেন এবং ওই ওলীর প্রতি মনোযোগ দেন, তখন উভয় রূহের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপিত হয়। এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করা হয়েছে যে আউলিয়ায়ে কেরাম জীবিতাবস্থায় বেশি সাহায্য করতে সক্ষম না বেসালপ্রাপ্ত অবস্থায়। কিছু উলামায়ে কেরাম বলেছেন যে বেসালপ্রাপ্ত আউলিয়া বেশি সাহায্য করতে সক্ষম; আর কতেক উলামা, রাসূলে করীম রঊফুর রহীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি হাদীস এ মতের স্বপক্ষে পেশ করে তা প্রমাণ করেছেন; হাদীসটিতে এরশাদ হয়েছে- ইযা তাহাই- ইয়্যারতুম ফীল উমুরে, ফাসতা’ঈনূ মিন আহলিল কুবূর- অর্থ: ’যখন তোমরা কোনো ব্যাপারে পেরেশানগ্রস্ত হও, তখন মাযারস্থ (আউলিয়া)-দের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করো’। শায়খ আব্দুল হক দেহেলভী (রহ:) শরহে মেশকাত গ্রন্থে বলেছেন যে এই বিষয়টির পরিপন্থী কোনো দালিলিক প্রমাণ কুরআন ও সুন্নাহ্ কিংবা উলামায়ে কেরামদের বাণীতে বিদ্যমান নেই (ফতোওয়ায়ে আযীযিয়া, ২য় খন্ড, ১০৮
0 মন্তব্যসমূহ